সিলেটে মোবাইলে চার্জ দেওয়ার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ৫০ জন আহত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানা সদরে গত শনিবার বিকেল থেকে রাতে যে সংঘর্ষটি ঘটেছে, তা স্থানীয়দের কাছে এক অবিস্মরণীয়, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মোবাইলে চার্জ দেওয়ার মতো তুচ্ছ এক বিষয় নিয়ে তর্কের ফলে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন, এবং আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

এই ঘটনায় দোকানে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও পরিস্থিতি প্রথমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

সংঘর্ষের সূচনা
এই ঘটনা শুরু হয় মোবাইলে চার্জ দেওয়ার জন্য দুই পক্ষের মধ্যে এক তুচ্ছ তর্ক থেকে। কোম্পানীগঞ্জ থানার সদর এলাকায় কাঠাঁলবাড়ী ও বর্ণি গ্রামের দুই ব্যক্তি এক দোকানে মোবাইলে চার্জ দেওয়ার বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি করেন। একপর্যায়ে তর্ক তিক্ততার রূপ নেয় এবং এক ব্যক্তি আরেকজনকে মারধর করতে শুরু করেন। এর পরপরই বর্ণি গ্রামের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে গাড়ি আটকে অবরোধ সৃষ্টি করেন। স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়, এবং তখন থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মারধরের ঘটনার পর বর্ণি গ্রামের লোকজন থানার দিকে চলে আসেন, এবং সেখানে কাঠাঁলবাড়ী ও কোম্পানীগঞ্জের লোকজনের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। একে অপরকে দেশি অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে সড়কজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এবং এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন। একাধিক স্থানীয় দোকানে ভাঙচুর, এবং কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

আহতদের অবস্থা

সংঘর্ষের পর আহতদের দ্রুত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে, এবং বাকি আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।

আরও পড়ুন :  জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস

সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। তবে, পুলিশের উপস্থিতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। এরপর সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সংবাদমাধ্যমকে জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর লোকজন অবস্থান করছে।”